আকাশজোড়া গল্পগাথা - হৃদয় হক
- Ex Tax: ৳225
- Price in reward points: 225
- Brands Pranto Prokashon
- Product Code: ASC213
- ISBN: 9789849449621
- Reward Points: 2
- Availability: In Stock
৳225
৳300
লেখকের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায়। প্রতি বছরই তার সেখানে যাবার প্ল্যান থাকে। তবে, বিভিন্ন কারণে বেশিরভাগই যাওয়া তার হয়না।গ্রামে তার অন্যতম প্রধান কা..
Available Options
লেখকের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায়। প্রতি বছরই তার সেখানে যাবার প্ল্যান থাকে। তবে, বিভিন্ন কারণে বেশিরভাগই যাওয়া তার হয়না।
গ্রামে
তার অন্যতম প্রধান কাজ হলো আকাশ দেখা। তারায় ভরপুর রাতের উজ্জ্বল আকাশ।
সুযোগ পেলেই লেখক রাত্রিবেলা পরিবার-পরিজনদের থেকে হঠাৎ গুম হয়ে যান। ছুটে
যান কোনো এক খোলা মাঠের পরিষ্কার আকাশের নিচে। গ্রামের তারাগুলি বেশ
উজ্জ্বল, স্বাস্থ্যবান। শহরে রাতের আকাশ বলে কিছু নেই। সে আকাশ লাল-হলুদ
আলোয় আলোকিত। সে আকাশে কোনো তারা নেই। আলোক-দূষণ যেন মুছে দিয়েছে শহরের
উজ্জ্বল তারাখচিত রাতের আকাশকে। ঠিক যেভাবে ইরেজার মুছে দেয় পেন্সিলের
লেখা। তবে যদি দু-চারটে তারার দেখা মেলে, তাদের দেখায় বেশ অনুজ্জ্বল,
অস্বাস্থ্যকর। যেন কতকাল ধরে কিছু খায়নি।
লেখকের নানু বাড়ি থেকে
ছোট মা'র বাড়ির দূরত্ব প্রায় বিশ মিনিট। তার ছোট মা'র বাড়িতে আমার আকাশ
দেখা শুরু হয় সূর্যাস্তের পর থেকেই। মাঝে আত্মীয়স্বজনদের সাথে মিলেমিশে
নাস্তা, অতপর আবার আকাশ। গ্রামে প্রায় ৯টার ভেতরেই সবাই রাতের ভোজ সেরে
নেয়। ভোজ শেষে সকলে মিলে আড্ডায় মেতে উঠেন। কখনোবা টেলিভিশন সেটে তাকিয়ে
থাকেন। কিন্তু, লেখক থাকেন বাহিরে। খোলা আকাশের নিচে, খোলা মাঠে। একলা।
কখনো দাড়িয়ে, কখনোবা বসে কিংবা মাদুরে উপরে শুয়ে। মাঝেমধ্যে দু'একজন
মানুষকে এদিকওদিক হাঁটতে দেখা যায়।
লেখকের নানু বাড়ির উঠান থেকে
আকাশ বেশ দেখা যায় বটে কিন্তু কম। গাছপালায় আকাশের বেশকিছু অংশের তারারা
পাতার ফাঁকে লুকোচুরি খেলে। বাড়ির পাশ দিয়ে একটা লম্বা রাস্তা চলে গেছে।
রাস্তা ধরে পূর্বে বহুদূর এগোলে বাজার, পশ্চিমে ভোমরকান্দি। বাড়ি থেকে
রাস্তা ধরে ১ মিনিট পশ্চিমে হেঁটে গেলেই এলাকার ঈদগাহ মাঠ। ঈদ আর জানাজার
নামাজ বাদে এই বড় মাঠ নিঃসঙ্গ। মাঠের সামনে পুকুর। পুকুরের ওপাড়ে বেশ
দূরে ঘরবাড়ির আলো জ্বলছে। পেছনে কবরস্থান আর ডানে রাস্তার ওপাড়ে মসজিদ।
স্বাভাবিক
ভাবেই ঈদগাহ মাঠ বড় হয়। এক প্রান্তে দাড়ালে, আঁধারের অন্য দিকে কি আছে
তা বোঝা বেশ মুশকিল। উঠান থেকেও বেশ বড় এলাকাজুড়ে মাঠের আকাশের রাজত্ব।
এক নজরে অনেকটুকুই দেখা যায়। যেসব তারাগুলি লুকোচুরি খেলছিলো লেখক তাদের
ধরে ফেলেছি! আর লুকানোর কোনো পথ নেই।
জন্মের পর থেকেই আকাশ লেখকের
চিরসঙ্গী। মাথার উপরের বিশাল আকাশকে লেখক কখনও ভুলে যাননি। প্রতিটি পরতে
পরতে আকাশ তার বিস্মিত করেছে। সুবিশাল মহাকাশের রহস্যকে বার বার উদঘাটন
করতে চেয়েছে লেখকে মন। তিনি কবি নই৷ কিন্তু জানেনই তো, কবিত্বের মূলেই আছে
বিস্ময় ও রহস্য। এই নিয়ে কবিদের জগৎ। কবিমনকে আলোড়িত করে বিশ্বজগতের
ক্ষুদ্র ও বিশাল, যাকিছু রহস্যবিস্ময়ে ভরা।
আকাশও বাদ পড়েনি লেখকের কবিমনকে আলোড়িত করতে। কতরকম তার অবলোকন, কতরকমে প্রকাশিত তার বিশালতার ব্যঞ্জনা, যেমন -
"আকাশে সাতটি তারা যখন উঠেছে ফুটে আমি এই ঘাসে বসে থাকি"।
অথবা, "অনন্ত কুয়োর জলে চাঁদ পড়ে আছে"।
অথবা, "আকাশ ধরিয়া হাতে নক্ষত্র-অক্ষর দেখি"।
অথবা, "জ্যোৎস্নারাতে বেবিলনের রানীর ঘাড়ের ওপর চিতার উজ্জ্বল চামড়ার শালের মতো জ্বলজ্বল করছিলো বিশাল আকাশ"!
ওই
বিশাল আকাশের নীল দিগন্ত পেড়িয়ে, নীলের সীমানা ছাড়িয়ে যে অনন্ত
অন্ধকার, সেখানে জ্বলজ্বল করছে হুমায়ূনের অনন্ত নক্ষত্রবীথি; কবিগুরুর
গ্রহ, তারা, রবি; লণ্ঠন হাতে জীবনানন্দের কালপুরুষ, অভিজিৎ, সিরিয়াস।
প্রাচ্যের কবিগুরুর মনে হয়েছে—‘আলো হাতে চলিয়াছে আঁধারের যাত্রী’। আর
পাশ্চাত্যের মহাকবি শেক্সপীয়ারের কবিতায় —
"Not from the stars do I my judgement pluck;
And yet methinks I have Astronomy,
But not to tell of good or evil luck,
Of plagues, of dearths, or seasons' quality;
Nor can I fortune to brief minutes tell,
Pointing to each his thunder, rain and wind,
Or say with princes if it shall go well
By oft predict that I in heaven find:
But from thine eyes my knowledge I derive,
And, constant stars, in them I read such art
As truth and beauty shall together thrive"
যতই
রাত যায়, আকাশের প্রতি লেখকের ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা ততই বাড়ে৷ আর সেই
বাড়তি ভালোবাসা থেকেই বইটির জন্ম। বইটি পড়ে যদি আকাশের সাথে মিশে যান;
ভুলে যাওয়া আকাশকে যদি আবারো মনে পড়ে — তবেই লেখাগুলিকে দুই মলাটের মাঝে
স্থান দেওয়া সার্থক বলে ধরে নেবেন লেখক।
Book | |
Number of Pages | 192 |
Cover Type | Hardcover |
Inner Color | B&W |
Edition/Impression | February 2021 |